Saturday, November 25, 2017

সশস্ত্র জঙ্গিরা যেভাবে অবরোধ করেছিল কাবা শরিফ: ইতিহাসের সাক্ষী


সৌদি আরবের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে নাটকীয় একটি ঘটনা হচ্ছে ১৯৭৯ সালে পবিত্র মক্কা নগরীতে কট্টরপন্থী সুন্নীদের অবরোধ। ইসলামের পবিত্রতম স্থান কাবা এবং একে ঘিরে তৈরি মসজিদ আল হারাম বা হারাম শরিফ অবরোধ করেছিল একটি সালাফিপন্থী গোষ্ঠী। তাদের দখল থেকে মক্কাকে মুক্ত করতে যে তীব্র লড়াই চলে, তাতে নিহত হয় শত শত মানুষ। সেই ঘটনা নিয়ে ইতিহাসের সাক্ষীর এবারের পর্ব:

১৯৭৯ সালের ২০শে নভেম্বর। ইসলামী বর্ষপঞ্জীতে এই দিনটির একটা প্রতীকী তাৎপর্য রয়েছে। একটা নতুন শতাব্দীর শুরু সেদিন, হিজরী ১৪০০ সালের প্রথম দিন। পবিত্র মক্কা নগরীর মসজিদ আল হারাম, বা হারাম শরিফ সেদিন হাজার হাজার মানুষে পরিপূর্ণ।

সারা পৃথিবীতে থেকে আসা মুসলিমরা সেদিনের ফজরের নামাজে যোগ দেয়ার অপেক্ষায়। মসজিদটি তৈরি করা হয়েছে চতুস্কোণ কাবা-কে ঘিরে। এটি হচ্ছে ইসলামের পবিত্রতম স্থান।

Saturday, November 18, 2017

ইয়াজুজ-মাজুজ কী এবং কোথায়??


ইয়াজুজ মাজুজ : বিশ্বাস ও নির্ভরতার ইতিহাস

গগ মেগগ কিংবা ইয়াজুজ মা’জুজ হল পৃথিবীর তিন ইব্রাহিমী ধর্মের একটি খুবই প্রচলিত বিশ্বাস।
ধর্মীয় কিতাব মতে, এই ইয়াজুজ মা’জুজ হল একটা খুবই উচ্ছৃঙ্খল প্রজাতির মানবগোষ্ঠি যারা সমগ্র পৃথিবীতে একসময় বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল। এবং, বাদশা জুলকারনাইন, তাদেরকে দমন করে দুইটি পাহাড়ের মাঝে একটি লৌহ দেয়ালের মাঝে বন্দী করে ফেলেন। তিনটি ধর্মেরই অনুসারীরা বিশ্বাস করেন, পৃথিবী ধ্বংস তথা কেয়ামত ঘটার আগে সমগ্র বিশ্বাসী মানুষদের সাথে এই গগ মেগগদের একটা সভ্যতা বিধ্বংসী যুদ্ধ হবে।
কারা এই গগ-মেগগ গোষ্ঠি? এই মহাবিশৃঙ্খলার অতীত হোতা, কিংবা ভবিষ্যৎবাণীর সত্য-প্রমাণ?  আরো বড় জনপ্রিয় আলোচ্য প্রশ্ন হলো, যেহেতু তারা মানবজাতিরই একটা অংশ, আজকে কারা তাদের বংশধর, কিংবা ভবিষ্যৎ বংশ প্রচারক? শুধু আজকে নয়, সেই প্রথম শতক থেকেই এঁদের জাতি পরিচয় নিয়ে যার পর নাই আশঙ্কিত হয়েছে। গবেষণা হয়েছে, এমন কি, প্রচারও হয়েছে। শতাব্দির পর শতাব্দি চলেছে এই ধারনা ভিত্তিক ‘খোঁজ দ্যা সার্চ’। একেশ্বরবাদী ধর্মের প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে, জগতে যতগুলো বড় মানব-যুদ্ধ বিপর্যয় হয়েছে, বিভিন্ন ধর্ম কিংবা অধর্মবেত্তারা ভিন্ন ভিন্ন যুদ্ধবাজ জাতিকে গগ মেগগের আসল বংশধর বলে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন।

Monday, August 28, 2017

আবৃত্তি একাডেমি নিয়ে জুয়েল আদীবের অনুভুতি

গতকাল মধ্যরাতের পর থেকেই ভাবছিলাম কিছু একটা লিখব আবৃত্তি একাডেমি নিয়ে। দুপুরে মজুমদার বিপ্লব দা’র হরবোলা’র জন্মদিন পালনের ছবি এবং সন্ধ্যায় মৃন্ময় মিজান (অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক পরিচালক, আবৃত্তি একাডেমি) ভাইয়ের পোস্ট পড়ে নিজের অনুভুতি প্রকাশের আগ্রহটা আরও বেড়ে গেলো।
আজ আমাদের প্রাণের সংগঠন আবৃত্তি একাডেমি’র জন্মদিন। “উচ্চারিত প্রতিটি কথা হোক শিল্প” -এ শ্লোগানকে ধারণ করে ১৯৯৮ সালের ২৮ আগস্ট এ সংগঠনের অভিযাত্রা। শৈশবেই সংগঠনে ভাঙন হয়ে আজ অনেকটা থিতু হয়ে এগিয়ে চলেছে স্বপ্ন পানে। মৃন্ময় মিজান ভাইয়ের পোস্টে সংগঠনের শুরুর দিককার নানা বর্ণ চড়াই-উতরাই ঘটনা বিধৃত হয়েছে। আমি সেসবের সময় ছিলাম না।

Saturday, July 15, 2017

কেনো ইহুদীরা এত বুদ্ধিমান হয়?


ইসরাইলের কয়েকটি হাসপাতালে তিন বছর মধ্যবর্তীকালীন কাজ করার কারণেই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করার চিন্তা আমার মাথায় আসে।
এতে অমত করার কোনই সুযোগ নেই যে, ইহুদীরা ইন্জিনিয়ারিং, সংগীত, জ্ঞ্যান বিজ্ঞান সহ জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই অন্যদের থেকে অনেক অনেক এগিয়ে এবং বিশেষ করে ব্যবসার ক্ষেত্রে। প্রসাধনী, খাদ্য, অস্ত্র, ফ্যাশন, ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রি ইত্যাদি সহ (হলিউড) পৃথিবীর প্রায় সত্তর ভাগের কাছাকাছি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এদের দখলে।

Monday, June 19, 2017

দুটি স্মৃতি


আজ বহুবছর পর দুটি স্মৃতি ইনবক্সে এসে উঁকি দিলো। কত সুর কত গান মনে পড়ে গেলো। মানুষের কত স্মৃতি অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হয়ে যায়। আমার স্মৃতিরা যত্নে আছে, এটি আমার জন্য সৌভাগ্যের। যারা যত্ন করে সংরক্ষণ করেছে, তাদের প্রতি নিরন্তর কৃতজ্ঞতা।

Sunday, June 18, 2017

বাবা দিবসের লেখা


আজ বাবা দিবস। বাবাকে নিয়ে অনেকের লেখা পড়লাম। কিছু লেখা হৃদয়ে হু হু বেদনার দীর্ঘশ্বাস নিয়ে এসেছে। আমিও কিছু লেখার কথা ভাবলাম। কিন্তু কী লিখি, কোন বিষয়ে লিখি- ভেবে পাচ্ছি না। আমার সবই তো বাবার হাতে গড়া।

দার্জিলিং থেকে ফেরার পথে

Saturday, June 17, 2017

আবৃত্তি একাডেমি করে কি পেলাম!


"এই তো জীবন। জীবন মানেই সংগঠন। সময়ের বাঁকে মন্দ এসে উঁকি না দিলে ভালোটুকু উপভোগ্য হয় না। তাই মন্দটুকুও হয়তো মাঝে মাঝে প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। আবৃত্তি একাডেমি কে ভালোবাসি, সবসময় নিজের চেয়ে সংগঠনের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেয়ার চেষ্টা করেছি। অতি নিয়ম-নীতি মানতে পারি না বলে ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে, এটা স্বীকার্য। মাঝেমধ্যে ঐ 'কী পেলাম?' প্রশ্ন ইতিউতি করলেও ভালোবাসার চোখরাঙানি বেশিদূর এগুতে দেয়নি। কিছু মানুষের আত্মিকতা প্রত্যক্ষ করেই একযুগ পূর্বে এ সংগঠনে যুক্ত হই। সে মানুষদের এতটাই শ্রদ্ধা করি যে নিজের কোনো খারাপ লাগা থাকলেও চুপ থাকি। ঐ যে ভালোবাসা, সেখানেই আটকে গেছি। গুরুজনরা যখন ভুলভাবে প্ররোচিত হয় তখন আঁতে লাগে। মৃন্ময় মিজান ভাইয়া আপনি যদি বিব্রতবোধ করেন কোনো কারণে, সেখানে আমরা তো নস্যি।" ---জুয়েল আদীব।

------মৃন্ময় মিজান ভাইয়ের ফেসবুক স্টেটাস:

Saturday, May 6, 2017

কাজল মাখা চোখের জল


তোর কাজল মাখা চোখের জল মুছে নিলাম কম্পিত করতলে, আর আমার পাথর চাপা হৃদয়ের নিঃশব্দ ক্রন্দন মিশে যাক মৌন শতদলে...

প্রশ্বাস আছে বলেই মানুষের প্রতিমুহূর্তের নিরাকার বিশ্বাস, শ্বাস থেকে নিশ্বাস জীবনে চুপিসারে কত ভাঙা-গড়ার আশ্বাস। বোধ থাকলেই কি সবসময় মনকে দেয়া যায় প্রবোধ, অনুরোধে বা প্রতিরোধে গতিময় সময়ের হয় না কভু গতিরোধ। এ সবই সময়ের চাওয়া, জীবনের বাস্তবতা।

Tuesday, May 2, 2017

পিকেএসএফ আমার কর্মক্ষেত্র ও কিছু স্মৃতি

ফেলে আসা দিন, আমি ফেলে আসি না। সঙ্গে করে বয়ে বেড়াই, হয়তো সব প্রকাশ করতে পারি না। দিন যায়, কথা থাকে...

গত ১৪টি মাস পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউণ্ডেশন (পিকেএসএফ) এ কর্মরত ছিলাম। কত কিছু জেনেছি, শিখেছি। কিছু ভালো মানুষের সান্নিধ্যে ছিলাম, যাঁদেরকে জীবনের বিভিন্ন আকে-বাঁকে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে মনে পড়বে। পিকেএসএফ এ চাকুরির একটি সুন্দর পরিবেশ বিরাজমান, যা সারাজীবন মনে রাখার মতো।

Monday, April 10, 2017

বর্ষবরণ, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বাঙ্গালীয়ানা


আমি বাংলা কিংবা বাঙ্গালী সংস্কৃতির গবেষক নই। কিন্তু নিজ দেশ বা সংস্কৃতির প্রতি উদাসীনও নই। তবে ইদানিং যেভাবে ও যে আঙ্গিকে বাংলা নববর্ষ পালিত হচ্ছে তাতে কিছু বিষয়ের হিসাব আমি এখনো মিলাতে পারিনি। আপনারা  হয়তো বলতে পারবেন –

১. বাঙ্গালী সংস্কৃতির ছাত্র-গবেষক সবাই দাবী করেন আমাদের সংস্কৃতি হাজার বছরের পুরনো। কিন্তু-
ক. ১৩৭২ বঙ্গাব্দে (১৯৬৫)  ছায়ানট সর্বপ্রথম ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’- এ গানের মাধ্যমে নতুনরূপে বর্ষবরণ শুরু করে।

খ. সর্বপ্রথম আনন্দ শোভাযাত্রার প্রবর্তন হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে ১৯৮৯ সালে। পরে ১৯৯৬ সাল থেকে চারুকলার এই আনন্দ শোভাযাত্রা মঙ্গল শোভাযাত্রা হিসেবে নাম লাভ করে।

গ. এবারই, ২০১৭ সালে, পশ্চিমবঙ্গে সর্বপ্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

মন্তব্য: তাহলে কি ধরে নেওয়া যায়, বর্ষবরণের এই নতুন রূপ ও মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙ্গালী সংস্কৃতি নয়, অন্তত হাজার বছরের সংস্কৃতি তো নয়ই। নয়ত, আমাদের সংস্কৃতিই হাজার বছরের পুরনো নয়। নতুবা আমরাই শুধু বাঙ্গালী, পশ্চিমবঙ্গের লোকজন নয়।

২. বর্ষবরণের অনুষঙ্গ হিসেবে এখন প্রচলিত হচ্ছে পান্তা-ইলিশ আর পোষাক।

মন্তব্য: আসলেই কি পান্তা ইলিশ আমাদের সংস্কৃতি? বিশ-ত্রিশ বছর আগেও ইলিশ স্থানীয় বাজারে দেখা যেত কালেভদ্রে [১৯৭২ সাল পর্যন্ত ইলিশ আহরণ প্রধানত পদ্মা, মেঘনা, করতোয়া, রূপসা, শিবসা, পায়রা ইত্যাদি নদীর উজানেই সীমাবদ্ধ ছিল (বাংলাপিডিয়া)]।

তাহলে ইলিশ সারা বাংলাদেশের সংস্কৃতি হয় কিভাবে? কেন পান্তা-আর আলু ভর্তা, মরিচ ভর্তা কিংবা অন্য কিছু নয়? আরো একটা বিষয় স্মর্তব্য, কমবেশি জানুয়ারী থেকে এপ্রিল হচ্ছে জাটকার সময়, দেশের আইনে যা ধরা নিষেধ। বর্ষবরণে এই অনুষঙ্গ তাই কতটুকু বাস্তবসম্মত?

এবার আসি, পোষাকে। পুরুষদের বেলায় পাঞ্জাবী-পায়জামা, আর নারীদের লাল পেড়ে সাদা শাড়ি। অবশ্য উৎসব পার্বণে পোষাক পরিচ্ছদে নারীদের আগ্রহ বেশি। বাংলাদেশের কোথায় লাল পেড়ে সাদা শাড়ি প্রচলিত আমি জানিনা। অন্তত আমি আমার এই জীবনে দেখিনি। শুধু বৈশাখ এলেই বর্ষবরণের নামে এটা পড়া হয়, অথচ বিশ বছর আগেও তা ছিল না।

৩. মঙ্গল শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত হচ্ছে  নানা মূর্তি, প্রতিকৃতি; যেমন- পাপেট, ঘোড়া, হাতি (১৮৮৯); বিশালকায় হাতি, বাঘের প্রতিকৃতির কারুকর্ম (১৯৯১); বিরাট আকারের কুমির (১৯৯২); বাঘ, হাতি, ময়ূর, ঘোড়া (১৯৯৩) ইত্যাদি। তাছাড়া কৃত্রিম ঢাক আর অসংখ্য মুখোশখচিত প্ল্যাকার্ডসহ, রং বেরংয়ের পোশাকে বিচিত্র সাজসজ্জা, আর বাদ্যযন্ত্র ও নৃত্য।

মন্তব্য: এর কোনটা বাংলাদেশের সাথে জড়িত। যদি একান্তই আমাদের দেশকে তুলে ধরতে হয় তাহলে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, নিদেনপক্ষে মহিষ, ভেড়া ইত্যাদি কেন নয়? তাছাড়া দৈত্য-দানব, রাক্ষস ইত্যাদি কিরূপ বিজ্ঞানসম্মত চেতনা; এদের নিয়ে কিভাবে আনন্দ করা যায়? কিংবা মঙ্গল আহ্বান করা যায়, আমি বুঝিনা।

পরিশেষে, বর্ষবরণের বিরোধিতা হুজুরগণ করবেনই তাতে আর বলার কি আছে? ইসলাম কি বলেছে তা আর এখানে নাই বা বললাম (আসলে বলার কিছু নেই ও, কেননা মূর্তি নিয়ে মিছিল, অশ্লীলতা আর পর্দাহীনতার বিধানে কোন দ্বিমত কোন ওলামাই কোনকালে করেননি)।

কিন্তু যদি আসলেই আমরা বাঙ্গালী সংস্কৃতিকে ভালোবাসি তাহলেও চিন্তার বিষয়- আমরা যা করছি তা কি আমাদের সংস্কৃতি? এগুলো কি আমাদের কালচারকে প্রতিনিধিত্ব করে? নাকি গত দু’তিন দশকে কতিপয়, হ্যাঁ মুষ্টিমেয় কতিপয়, সুশীলদের চাপিয়ে দেওয়া কিছু অনুষ্ঠানকে আমরা পালন করে নতুন করে বাঙ্গালী সাজছি?

একটু নিজেকে প্রশ্ন করি, ত্রিশ বছর আগেও কি এ দেশে এমন ছিল? নাকি আরও অতীতে ছিল? আমার জানামতে, মেলা, নৌকা বাইচ, কুস্তি খেলা, যাত্রাপালা, হালখাতা ইত্যাদি ছিল নতুন বর্ষের অনুষঙ্গ। আজ হঠাৎ করে কিভাবে (ও কেন) আমাদের সংস্কৃতি পরিবর্তিত হল? তাও শুধু ঢাকায়? (সম্ভবত ঢাকাতেই শুধু বাঙ্গালীদের বাস)।

জানিনা, আমরা জনগণ, কিছুই জানিনা। কিন্তু এটা জানি, বাঙ্গালীদের হুজুগেপনার ভালো সদ্ব্যবহারই হচ্ছে এসব কাজে। ত্রিশ বছরে যদি আমাদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পরিবর্তন হতে পারে, তাহলে আমরা আশাবাদী। সামনের ত্রিশ বছরে হয়ত আমরা সত্যিকারের ভালো কোন অনুষ্ঠানের প্রবর্তন করব। যাতে কল্যাণ হবে সবার, গরীব-দুঃখী, ধনী নির্ধন, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার; মুসলিমরাও সেদিন নিশ্চয়ই বিরোধিতা করবেন না। আমরা চাইলেই সম্ভবত তা করতে পারি।
লেখক:  মুস্তাফা মনজুর, সহকারী অধ্যাপক, ঢা.বি.
Source: বর্ষবরণ, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বাঙ্গালীয়ানা

Saturday, April 8, 2017

মন বলে ফিরে চল পহেলা অগ্রহায়ণে


বাঙালির ইতিহাস চার হাজার বছরের। আর বাঙালির নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস মাত্র সেদিনের !

বাংলা সন ও পহেলা বৈশাখ শিরোনামে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত (১৪ এপ্রিল ২০১১) ড. শরদিন্দু ভট্টাচার্যের লেখায় পাই "বাংলা বছরের পঞ্জিকায় যে ১২টি মাস বর্তমান, তার ১১টিই নক্ষত্রের নামে নামাঙ্কিত। এ ক্ষেত্রে 'বৈশাখ' বিশাখা নক্ষত্রের নামে, 'জ্যৈষ্ঠ' জ্যাষ্ঠা নক্ষত্রের নামে, 'আষাঢ়' আষাঢ়ার নামে এবং এরূপ শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র যথাক্রমে শ্রবণা, পূর্বভাদ্রপদা, অশ্বিনী, কৃত্তিকা, পৌষী, মঘা, ফাল্গুনী ও চিত্রার নামে অঙ্কিত হয়েছে। যে মাসটি নক্ষত্রের নামের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, সেটি হচ্ছে অগ্রহায়ণ; আর এই নামটির সঙ্গেই মিশে আছে বাংলার কিছু ইতিহাস, কিছু স্মৃতি এবং কিছু বিস্মৃত হয়ে যাওয়া তথ্য।

Friday, April 7, 2017

মানবাধিকার এবং ওআইসির দলিল


মানবাধিকার মানবজাতির অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ের মধ্যে অন্যতম। মানবাধিকার মানুষের স্বভাবগত। অর্থাৎ মানুষের যে স্বভাব তার মধ্যেই মানবাধিকারের দাবিটি রয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কুল্লু মাউলুদিন আলাল ফিতরা’। এর অর্থ, প্রত্যেক ব্যক্তিকে সৃষ্টি করা হয়েছে একটি স্বভাবের ওপর। সে স্বভাবের মধ্যে রয়েছে স্বাধীনতা। হজরত উমর রা:-এর একটি বিখ্যাত বক্তব্য আছে : ‘আল্লাহ তো তোমাদের সবাইকে স্বাধীন করে সৃষ্টি করেছিলেন, কে তোমাদের গোলাম করল?’ এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য।

Saturday, April 1, 2017

ফেসবুকের যুগ বিভাজন ও বিচিত্র বৈশিষ্ট্য


মানবসভ্যতার মতো ফেসবুককেও যদি কয়েকটা যুগে বিভক্ত করা যায়, তাহলে কোন যুগের অবদান কেমন হবে,

প্রাচীন যুগ (২০০৪-০৮)

অনেকের মতে, এই যুগকে ‘অন্ধকার যুগ’ বলা হয়ে থাকে। কারণ, এ যুগে মানুষ ফেসবুক সম্পর্কে খুব কমই জানত। এ যুগের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো হলো...

১. এ যুগে বাংলাদেশি কারও ফেসবুক আইডি ছিল কি না; এ ব্যাপারে ইতিহাসবিদদের মধ্যে সন্দেহ আছে।

২. এ যুগে ফেসবুকে একটা আইডি খুলতে পারাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, অনেকেই আইডি খুলতে গিয়ে প্যাঁচানো অপশনের গর্ভে হারিয়ে যায়।

Monday, March 27, 2017

কত কিছু লিখতে চায় মন

কত কিছু লিখতে চায়, শেয়ার করতে চায় এ মন, সব কিছু কি লেখায় প্রকাশ করা যায় অথবা অন্তরে উঁকি দেয়া সব অবিনশ্বরতা কি শেয়ার করার সুচারু ভঙিমা পাওয়া যায়? কত ভাবনাই তো ডানা মেলে উড়তে চায়, কিন্ত সেই উদার উন্মুক্ত আকাশ পাওয়া বেশ দায়।

সময়-সুযোগ কি আর সবসময় অনুকূলে থাকে? সময় থাকলে সুযোগ থাকে না, সুযোগ থাকলে সময় বের করা মুশকিল। আবার সময়-সুযোগ থাকলে মন সায় দেয় না অথবা অবিন্যস্ত থাকে ভাবনাগুলো। তবে প্রকাশের পথ খুঁজে না পেলেও অবিচিন্তনগুলো, হৃদয়ের আকুতিসমগ্র, মনের কথামালা- সবই মনে থাকে একটু-আধটু।

এক যুগেরও আগে একটি গল্পের প্লট মনে এসেছিলো। এখনও মনে আছে, মাঝে মাঝে ভাবি একদিন বসে লিখে ফেলবো, কিন্তু লেখা হয়নি আজ অবধি। তখন আমি খুব ঘনঘন ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেনে যাতায়াত করতাম। ছাত্র মানুষ দু'একবার বিনা টিকেটেও ভ্রমণ করতে হয়েছিলো। সেই সময়কার ভাবনা। ঢাকা থেকে 'মহানগর গোধূলী' ট্রেনেই বেশি যেতাম। ফেরার সময় 'তূর্ণা নিশীথা' থাকতো প্রথম পছন্দ।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার এক প্রিয় সহপাঠিনী ছিলো, নাম শামীমা সুলতানা শ্যামা। তবে আমার বান্ধবী মোটেও শ্যামলা ছিলো না। তার বাড়ি ছিলো নরসিংদী। ট্রেন যখন নরসিংদী অতিক্রম করতো, তখন শ্যামাকে খুব মনে পড়তো। গোধূলীর রঙিন আবীরে ভেসে উঠতো প্রিয় বন্ধুর মুখ। এরকম হাজারো অচেনা ভাবনার মাঝে একদিন অলিখিত গল্পের আঙিকটাও মনে এসেছিলো। গল্পের নামটাও ঠিক করে রেখেছিলাম তখন। 'রেললাইনের পাশে দোতলা বাড়ি' সেই গল্পের শিরোণাম।

Wednesday, March 22, 2017

আজ কিন্তু বিশ্ব কবিতা দিবস

সুবোধ সরকার
২১ মার্চ, ২০১৭

কবিতা আবার কোন কাজে লাগে? কবিতার কোনও সেনসেক্স হয় না, কবিতার কোনও বাজার নেই। কবিতা কি এক ইঞ্চিও উপকার করতে পেরেছে মানুষের? জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ— এই তিনটি সময়ে তিনটি ল্যাটিন শ্লোক আর তিনটি সংস্কৃত পদ্য প্রয়োজন পড়ে বটে, তবে তার জন্য একটা বিশ্ব-কবিতা দিবস? ‘ইউনেস্কো’ যখন প্রস্তাব দিয়েছিল, তখন এ ভাবেই প্রশ্ন উঠে এসেছিল কবিতার বিরুদ্ধে। আড়াই হাজার বছর আগে আরও মারাত্মক কথা উঠেছিল, কবিদের নির্বাসন দেওয়া হোক। যে প্রাচীন গ্রিসে কথাটা উঠেছিল, সেই গ্রিসই ছিল ইউরোপীয় কবিতার তলপেট।
একটা পেসমেকার যেমন কাজে লাগে, একটা হুইলচেয়ার যেমন কাজে লাগে, কবিতা কি তেমন কোনও কাজে লাগে? কবিতা লিখে তো কবিরা কিছুই পান না। টাকা নেই, পয়সা নেই, মান নেই, মর্যাদা নেই। এক ভাঁড় চা আর গলায় একটা ন্যাতা ছাড়া কবিদের কপালে কিছুই জোটে না। কবি-খ্যাতি? সে-ও তো আজ আছে, কাল নেই। তা হলে পৃথিবী জুড়ে পাঁচ শতাধিক ভাষায় কেন প্রতি দিন লেখা হয়ে চলেছে কবিতা? কবিতাই কি মনুষ্য প্রজাতির আদিমতম ও আধুনিকতম শিল্প যা মুদ্রাকে, টাকাকে, ক্যাপিটালকে তাচ্ছিল্য করে এল নিঃশব্দের তর্জনি দিয়ে?