Monday, March 27, 2017

কত কিছু লিখতে চায় মন

কত কিছু লিখতে চায়, শেয়ার করতে চায় এ মন, সব কিছু কি লেখায় প্রকাশ করা যায় অথবা অন্তরে উঁকি দেয়া সব অবিনশ্বরতা কি শেয়ার করার সুচারু ভঙিমা পাওয়া যায়? কত ভাবনাই তো ডানা মেলে উড়তে চায়, কিন্ত সেই উদার উন্মুক্ত আকাশ পাওয়া বেশ দায়।

সময়-সুযোগ কি আর সবসময় অনুকূলে থাকে? সময় থাকলে সুযোগ থাকে না, সুযোগ থাকলে সময় বের করা মুশকিল। আবার সময়-সুযোগ থাকলে মন সায় দেয় না অথবা অবিন্যস্ত থাকে ভাবনাগুলো। তবে প্রকাশের পথ খুঁজে না পেলেও অবিচিন্তনগুলো, হৃদয়ের আকুতিসমগ্র, মনের কথামালা- সবই মনে থাকে একটু-আধটু।

এক যুগেরও আগে একটি গল্পের প্লট মনে এসেছিলো। এখনও মনে আছে, মাঝে মাঝে ভাবি একদিন বসে লিখে ফেলবো, কিন্তু লেখা হয়নি আজ অবধি। তখন আমি খুব ঘনঘন ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেনে যাতায়াত করতাম। ছাত্র মানুষ দু'একবার বিনা টিকেটেও ভ্রমণ করতে হয়েছিলো। সেই সময়কার ভাবনা। ঢাকা থেকে 'মহানগর গোধূলী' ট্রেনেই বেশি যেতাম। ফেরার সময় 'তূর্ণা নিশীথা' থাকতো প্রথম পছন্দ।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার এক প্রিয় সহপাঠিনী ছিলো, নাম শামীমা সুলতানা শ্যামা। তবে আমার বান্ধবী মোটেও শ্যামলা ছিলো না। তার বাড়ি ছিলো নরসিংদী। ট্রেন যখন নরসিংদী অতিক্রম করতো, তখন শ্যামাকে খুব মনে পড়তো। গোধূলীর রঙিন আবীরে ভেসে উঠতো প্রিয় বন্ধুর মুখ। এরকম হাজারো অচেনা ভাবনার মাঝে একদিন অলিখিত গল্পের আঙিকটাও মনে এসেছিলো। গল্পের নামটাও ঠিক করে রেখেছিলাম তখন। 'রেললাইনের পাশে দোতলা বাড়ি' সেই গল্পের শিরোণাম।

Wednesday, March 22, 2017

আজ কিন্তু বিশ্ব কবিতা দিবস

সুবোধ সরকার
২১ মার্চ, ২০১৭

কবিতা আবার কোন কাজে লাগে? কবিতার কোনও সেনসেক্স হয় না, কবিতার কোনও বাজার নেই। কবিতা কি এক ইঞ্চিও উপকার করতে পেরেছে মানুষের? জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ— এই তিনটি সময়ে তিনটি ল্যাটিন শ্লোক আর তিনটি সংস্কৃত পদ্য প্রয়োজন পড়ে বটে, তবে তার জন্য একটা বিশ্ব-কবিতা দিবস? ‘ইউনেস্কো’ যখন প্রস্তাব দিয়েছিল, তখন এ ভাবেই প্রশ্ন উঠে এসেছিল কবিতার বিরুদ্ধে। আড়াই হাজার বছর আগে আরও মারাত্মক কথা উঠেছিল, কবিদের নির্বাসন দেওয়া হোক। যে প্রাচীন গ্রিসে কথাটা উঠেছিল, সেই গ্রিসই ছিল ইউরোপীয় কবিতার তলপেট।
একটা পেসমেকার যেমন কাজে লাগে, একটা হুইলচেয়ার যেমন কাজে লাগে, কবিতা কি তেমন কোনও কাজে লাগে? কবিতা লিখে তো কবিরা কিছুই পান না। টাকা নেই, পয়সা নেই, মান নেই, মর্যাদা নেই। এক ভাঁড় চা আর গলায় একটা ন্যাতা ছাড়া কবিদের কপালে কিছুই জোটে না। কবি-খ্যাতি? সে-ও তো আজ আছে, কাল নেই। তা হলে পৃথিবী জুড়ে পাঁচ শতাধিক ভাষায় কেন প্রতি দিন লেখা হয়ে চলেছে কবিতা? কবিতাই কি মনুষ্য প্রজাতির আদিমতম ও আধুনিকতম শিল্প যা মুদ্রাকে, টাকাকে, ক্যাপিটালকে তাচ্ছিল্য করে এল নিঃশব্দের তর্জনি দিয়ে?