Pages

Tuesday, May 2, 2017

পিকেএসএফ আমার কর্মক্ষেত্র ও কিছু স্মৃতি

ফেলে আসা দিন, আমি ফেলে আসি না। সঙ্গে করে বয়ে বেড়াই, হয়তো সব প্রকাশ করতে পারি না। দিন যায়, কথা থাকে...

গত ১৪টি মাস পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউণ্ডেশন (পিকেএসএফ) এ কর্মরত ছিলাম। কত কিছু জেনেছি, শিখেছি। কিছু ভালো মানুষের সান্নিধ্যে ছিলাম, যাঁদেরকে জীবনের বিভিন্ন আকে-বাঁকে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে মনে পড়বে। পিকেএসএফ এ চাকুরির একটি সুন্দর পরিবেশ বিরাজমান, যা সারাজীবন মনে রাখার মতো।



শুরুর দিন থেকে শেষদিন অবধি যা পেয়েছি, আমার মনে হলো শেষ কর্মদিবসে সবচেয়ে বেশি পেয়েছি। যা মনের মনিকোঠায় আজীবন খোদাই হয়ে রবে। এখানকার উন্নত মনের মানুষগণ আমার মনের সুউন্নত স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন। যাঁদের কথা না বললে আমার অপ্রকাশিত স্মৃতির কথামালা আরও ভারী হয়ে যাবে...

--পিকেএসএফ এর সম্মানীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সাবেক মূখ্য সচিব) জনাব আবদুল করিম স্যার, যাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইন্টারভিউ বোর্ডের সুপারিশে আমি এ প্রতিষ্ঠানে যোগদান করি। তাঁর প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ। শেষ করমর্দনে তিনি বললেন, "তোমাকে অভিনন্দন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমি পিকেএসএফ-এর অ্যাম্বেসেডর হিসাবে যাচ্ছো। তোমার জন্য শুভ কামনা রইল।"

--পিকেএসএফ এর সম্মানীয় উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (কার্যক্রম-১), জনাব ফজলুল কাদের স্যার। তাঁকে সম্মান জানাই। শেষ দেখায় আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, সিভিল সার্ভিসে যাচ্ছেন? আমি বললাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি বললেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ও সিভিল সার্ভিসে গেলে আমরা আটকিয়ে রাখি না, উৎসাহিত করি। বেস্ট আব লাক, আই উইশ ইউ।

--পিকেএসএফ এর সম্মানীয় উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ), ড. জসীম উদ্দিন স্যার। যাঁর বিভাগেই আমি কর্মরত ছিলাম। তিনি একজন সৌম্য ব্যক্তিত্ব এবং উন্নত মনের অধিকারী। এতদিনে তাঁকে যা বুঝেছি, তার চেয়ে শেষদিনে এসে আরও বেশি করে বুঝলাম, জানলাম। বিশেষ করে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যে আমার এ বিশাল স্টেটাস। শেষদিনের শেষ সময়গুলো তাঁর সঙ্গে কাটিয়ে পিকেএসএফকে বিদায় জানিয়ে এলাম। প্রায় পৌনে একঘন্টা একান্তে সময় দিয়েছেন স্যার আমাকে। এ আমার জন্যে সৌভাগ্যের। অভিনন্দিত করেছেন, সময়ের অনেক বিষয় আলাপ করেছেন, ভবিষ্যতে যেকোনো শুভ কাজে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। মহামূল্যবান একটি উপহারও দিয়েছেন, একজোড়া সুন্দর কলম। এ আমার পিকেএসএফ থেকে পাওয়া শ্রেষ্ঠ উপঢৌকন। জসীম স্যার, পিকেএসএফকে এতদূর নিয়ে আসার, একটি মডেল অরগানাইজেশন হিসাবে প্রতিষ্ঠার পেছনে যাঁর অবদান অকুন্ঠ। বৈরি বলয়েও যিনি পিকেএসএফ-এর স্বার্থ নিয়ে ভাবেন এবং অগ্রাধিকার প্রদান করেন। তাঁর সততার সতত ব্যক্তিত্বের কাছে মাথা নুয়ে আসে। তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। ভালো থাকুন স্যার সবসময়। সত্য ও সততা বৈরি বলয় নিশ্চিহ্ন করুক। সৃষ্টিকর্তা আপনার সহায় হবেন।

--সম্মানীয় মহাব্যবস্থাপক (কার্যক্রম) জনাব একিউএম গোলাম মাওলা স্যার, যাঁকে অন্য অনেকের চেয়ে আলাদা একজন সজ্জন ও অমায়িক ব্যক্তি হিসাবে মনে থাকবে। তিনি আমাকে মন থেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাঁর প্রতিও আমার কৃতজ্ঞতা।
--সম্মানীয় মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) জনাব জিয়াউদ্দিন ইকবাল স্যার, যাঁর তত্ত্বাবধানে আমি কাজ করেছি। তিনি সরাসরি আমার কাজ তদারকি করেছেন। চেষ্টা করেছি তাঁর নির্দেশনা মতো কাজ করার, হয়তো সবকিছু যথাযথ করতে পারিনি। তবু আমাকে কাজের ক্ষেত্রে কখনও রুঢ অচরণ করেননি। একজন পরিকল্পিত ও প্রাজ্ঞ মহাব্যবস্থাপক হিসাবে সুপরামর্শ দিয়েছেন সকল কাজে। তাঁর প্রতি আমার গভীর কৃতজ্ঞতা। আমার নতুন কর্মজীবনের খবর শুনে অনেক খুশি হয়েছেন এবং আন্তরিক শুভ কামনা জানিয়েছেন। এ আমার জন্যে অনেক বড় পাওয়া।
--আমার সুপারভাইজর সম্মানীয় উপ-মহাব্যবস্থাপক ইঞ্জিনিয়ার নজমুল ইসলাম। একজন অত্যন্ত সৎ ও ভালো মানুষ। যিনি অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রতি খুবই আন্তরিক। তাঁর অধীনে কাজ করে আমি খুবিই এনজয় করেছি, তিনি খুবই হেল্পফুল। আমার ক্যারিয়ারের ব্যাপারে সবসময় উৎসাহ যোগাতেন। তাঁর প্রতি আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। এমন মানুষগণকে কখনও ভোলা যায় না। যাজাকাল্লাহু তায়ালা আল-খাইর। আর ডিজিএম কাইয়ুম স্যার আমাকে স্নেহ করতেন। বিভিন্ন সময় সুন্দর হাতের লেখার প্রয়োজন হলে ডাকতেন। তাঁর প্রতিও কৃতজ্ঞতা।

--অার সবশেষে সহকর্মীদের মধ্যে যাদের নাম স্মরণে থাকবে, যাঁরা আমাকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেছেন। আতাউর রহমান সরকার স্যার, দেলোয়ার হোসেন ভাই, এইচ.এম আসাদুজ্জামান ভাই, রাব্বানী ভাই, রাসেল ভাই, নাজমুস সাকিব ভাই, আনোয়ার ভাই, শফি কামাল ভাই, মিস সালমা, কামাল, সেকান্দর ও অন্যান্য সহযোগী সহকর্মীর প্রতি অভিবাদন ও কৃতজ্ঞতা রইল। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

আমার যেকোনো অনাকাংখিত আচরণের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী এবং সুন্দর আগামীর জন্য সকলের দুআপ্রার্থী। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউণ্ডেশন (পিকেএসএফ) এর সার্বিক সফলতা ও কল্যাণ কামনা করছি।

পুণশ্চ: একজনার প্রতি আমি খুব বিরক্ত ছিলাম, অনেকে তার আচরণে বিরক্ত হয়। আমি এখানে নাম উচ্চারণ না করলেও, গাড়িতে-সিঁড়িতে, কারণে-অকারণে, কান্নায়-রান্নায়-অন্যায় সর্বত্র যে নাম উচ্চারিত হয়। এরকম এক/দুই জনের জন্য সফল প্রতিষ্ঠানের সুনাম মাঝে-মধ্যে বিঘ্নিত হয়, কাজের ক্ষেত্রে হ-য-ব-র-ল অবস্থা তৈরি হয়। সাধু সাবধান থাকুন। অাল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন, সবাইকে রক্ষা করুন।
০২ মে ২০১৫

No comments:

Post a Comment